একটি ছোট্ট গ্রামে একবার একটি ছোট্ট পাখি বাস করত। তার নাম ছিল টুকি। টুকি খুবই সাহসী ছিল, কিন্তু তার একটি বড় ইচ্ছে ছিল আকাশে অনেক দূর পর্যন্ত উড়ে যাওয়ার। প্রতিদিন সে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবত, "কী সুন্দর এই আকাশ! কেমন হবে যদি আমি অনেক দূর পর্যন্ত উড়ে যেতে পারতাম?" কিন্তু তার মা তাকে বলত, "তুমি তো ছোট, এতদূর উড়ে গেলে তো বিপদ হতে পারে। আকাশের পথ খুব কঠিন, সেখানে বড় বড় পাখিরা থাকে।"
টুকির কিন্তু কথা শুনতে ভালো লাগত না। তার মনে বিশ্বাস ছিল যে একদিন সে আকাশের অনেক দূর পর্যন্ত উড়তে পারবে। একদিন সে তার মায়ের অজান্তে উড়ে গেল। সে প্রথমে খুবই আনন্দে ছিল। আকাশে নীলের সমুদ্রে নিজেকে হারিয়ে ফেলল সে। কিন্তু একটু পরে তার ডানা ক্লান্ত হয়ে গেল, এবং তখন সে বুঝতে পারল যে সে অনেক দূরে চলে এসেছে।
তার মনটা ভয়ে কাঁপতে লাগল, কারণ সে পথ হারিয়ে ফেলেছিল। চারপাশে তাকিয়ে সে কাউকে দেখতে পাচ্ছিল না। একটু পরে এক বড় পাখি তাকে দেখতে পেয়ে তার কাছে এলো। বড় পাখিটি টুকিকে দেখে মৃদু হাসি দিয়ে বলল, "তুমি এত ছোট, একা একা এতদূর চলে এসেছো কেন?" টুকি লজ্জায় মাথা নিচু করে বলল, "আমি শুধু দেখতে চেয়েছিলাম, কত দূর পর্যন্ত উড়তে পারি।"
বড় পাখিটি তার কথা শুনে বলল, "সাহসী হওয়া ভালো, কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ আরও ভালো। তোমার মায়ের কথা শুনলে তুমি এত বিপদে পড়তে না। তবুও তোমাকে সাহায্য করব।" এরপর বড় পাখিটি টুকিকে তার গ্রামের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে গেল।
গ্রামে ফিরে এসে টুকি তার মায়ের কাছে ক্ষমা চাইল। সে বুঝতে পেরেছিল, শুধুমাত্র সাহসই নয়, অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন। সেই দিন থেকে টুকি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে সে ধীরে ধীরে আকাশে উড়তে শিখবে, এবং নিজের ক্ষমতা বুঝে তবেই আরও দূর যাবে।
নৈতিক শিক্ষা: সাহসী হওয়া ভালো, কিন্তু সাথে বুদ্ধিমত্তা ও অভিজ্ঞতারও প্রয়োজন। বিপদ এড়াতে বড়দের কথা শোনা উচিত এবং যেকোনো কাজের আগে নিজের সীমাবদ্ধতা বুঝে তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
Post a Comment